ইউরোপের সেরা ফুটবল প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে যে রিয়ালের নিজস্ব কাপ প্রতিযোগিতা বিনা কারণে বলা হয় না তার প্রমাণ আরও একবার দেখল বিশ্ব। ঘরের মাঠে ২-০ তে পিছিয়ে থেকে অন্য দল যেখানে হাল ছেড়ে দেয় সেখানে রিয়াল দুর্দান্ত ভাবে কামব্যাক করে দেখালো। কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা দুই হোলে পিছিয়ে থেকেও বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে নিজেদের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের মর্যাদাটা বেশ ভালোভাবেই রাখল।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদ এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী করলো দর্শকদের। প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অসাধারণ হ্যাটট্রিকের কল্যাণে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৫-২ ব্যবধানে হারিয়ে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় লস ব্লাঙ্কোসরা।
গত মৌসুমের ফাইনালের পুনরাবৃত্তির ম্যাচে যেন প্রতিশোধের নেশায় নেমেছিল বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। শুরু থেকেই ডর্টমুন্ড বার্নাব্যুতে নিজেদের দাপট দেখায়। ডনিয়েল মালেনের ৩০ মিনিটের গোলে এগিয়ে যায় জার্মান ক্লাবটি। এরপর ৩৪ মিনিটে জেমি গিটেন্স গোল করে ব্যবধান ২-০ করে দেয়। প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণ ভাগ বেশ কিছুটা নিষ্প্রভ ছিল, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহাম চেষ্টা করলেও তাদের মধ্যে কোনো কার্যকরী সংযোগ দেখা যায়নি।
তখন মনে হচ্ছিল ডর্টমুন্ড মনে হয় ঠিকই প্রতিশোধ নিতে পারবে ফাইনালে পরাজয়ের। তবে ডর্টমুন্ড মনে হয় ভুলতে বসেছিল একটি বহুল প্রচলিত ফুটবল প্রবাদ, ‘বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অত্যন্ত দীর্ঘ সময়’। বিখ্যাত এই প্রবাদটিকেই সত্য প্রমাণিত করলো রিয়ালের খেলোয়াড়রা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল মাদ্রিদের দৃশ্যপট পুরো বদলে যায়। ৬০ মিনিটে আন্তোনিও রুডিগারের হেড থেকে গোল করলে ব্যবধান কমায় রিয়াল। এর দুই মিনিট পরই ভিনিসিয়ুস জুনিয়র গোল করে সমতা ফেরান। ৮৩ মিনিটে অধিনায়ক লুকাস ভাসকুয়েজ ডান প্রান্ত থেকে গোল করে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে নেন।
তারপর ভিনিসিয়ুস ম্যাচের বাকি সময়জুড়ে নিজের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আরও দুটি গোল করেন, যার মধ্যে তার দ্বিতীয় গোলটি ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিজ হাফ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স চিরে ফেলে দুর্দান্ত এক শটে গোল করেন তিনি। এরপর যোগ করা সময়ে আরো একটি গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি।
এই জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে তাদের অপরাজিত থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রাখল। এ জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগের লিগ পর্বে সর্বশেষ ম্যাচে হারের ক্ষত অনেকটাই কমিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।