রাজনীতি

আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে : নাসীরুদ্দীন

আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে : নাসীরুদ্দীন


আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘গণঅভ্যুত্থানের নেক্সাস’ খ্যাত রামপুরা-বাড্ডার ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধে শহীদ পরিবার, আহত ও যোদ্ধাদের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার বাড্ডাস্থ ডিআইটি খেলার মাঠে দুপুর সাড়ে তিনটা থেকে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ফ্যাসিবাদী গণহত্যাকারী হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিদায় হয় নাই। তারা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তারা। যারা দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, সেই দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তির ঐক্য বজায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকে তারা মুজিববাদের জন্য হাহাকার করছে। এই মুজিববাদী ফ্যাসিবাদী আদর্শ ৭২-৭৫ শাসনামলে ৩০,০০০ মানুষ হত্যা করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল মুজিববাদ। জাতীয় নাগরিক কমিটি মুজিববাদের কবর রচনা করবে, ইনশাআল্লাহ।

সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, পিলখানা, শাপলা হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের আওয়ামী ক্রিমিনাল সিন্ডিকেটের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। দিল্লীকে পরিষ্কার করে জানাতে চাই, আপনারা গণহত্যাকারী হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন। শুধু তাই না, আপনারা বড় গলায় বলছেন, হাসিনা আপনাদের আশ্রয়ে থাকবেন। এতে প্রমাণ হয় আপনারা বাংলাদেশের জনগণকে চান না, পতিত গণহত্যাকারী হাসিনাকে চান। অবিলম্বে হাসিনাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করুন।

ভারতের গণতান্ত্রিক জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের দেশে পতিত গণহত্যাকারী হাসিনাকে আশ্রয় দেবেন না। আপনাদের সরকারকে বাধ্য করুন যেন তারা হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তুলে দেয়। গণহত্যাকারী হাসিনাকে জায়গা দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হবে না। এ সময় দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানান তিনি।

মুখপাত্র সামান্তা শারমিন তার বক্তব্যে বলেন, দলমত নির্বিশেষে অভ্যুত্থানের কমিটমেন্ট টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। বাড্ডা রামপুরার শিক্ষার্থী-জনতা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আমলাতন্ত্রকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। গণঅভ্যুত্থানবিরোধী শক্তি হিসেবে হাজির হবেন না। জনগণ কিন্তু সতর্ক। সবাই খেয়াল রাখছে। আমলাতন্ত্রে ফ্যাসিবাদের দালালেরা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। আপনারা ভুলে যাবেন না আপনারা জনগণের সরকার। আপনাদের কর্মকাণ্ডে অভ্যুত্থানের ছাপ থাকতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করুন। দ্রুত পুলিশকে কাজে বহাল করুন। যারা কাজে ফিরবে না, তাদেরকে পলাতক ঘোষণা করে, তরুণদের পুলিশে ঢোকানোর উদ্যোগ নিন। তরুণরাই পাহারা দেবে আগামীর বাংলাদেশ। জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এখনো চলমান। এই অভ্যুত্থানকে সফল করতে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দিয়ে দেশ ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে এগিয়ে আসুন।

নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মাজহারুল ইসলাম ও হুজাইফা ওমরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন রামপুরা-বাড্ডা অঞ্চলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে শহীদ রেজাউল করিমের স্ত্রী আকলিমা আক্তার, শহীদ মারুফের পিতা মো. ইদ্রিস, শহীদ মিজানুর রহমানের পিতা কামাল হোসেন মোল্লা, শহীদ গঙ্গাচরণ রাজবংশীর স্ত্রী বতুল রাণী রাজবংশী, ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামে আহত মো. রিফাত এবং ওই এলাকার সংগঠক ও এলাকাবাসী।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সানজিদা ইসলাম তুলি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মশিউর রহমান, তাহসিন রিয়াজ, এস এম শাহরিয়ার।

সমাবেশ শেষে আহত ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যবৃন্দ।





Source link

Shares:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।