মিসরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ। ছেলে দোদি আল ফায়েদ প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হলে তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন। ছেলে দোদি ও ডায়ানার মৃত্যুর পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, প্রিন্স ফিলিপের নির্দেশে তাদের হত্যা করা হয়েছিল।
দোদি ও প্রিন্সেস ডায়ানা নিহতের পর ১০ বছর ধরে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন আল ফায়েদ। দুর্ঘটনার পর তাদের হত্যা করা হয় বলেও দাবি করেন তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেননি এ ধনকুবের।
এসবের পরও পুনরায় ভয়ংকর অভিযোগের বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মীরা ধর্ষণের অভিযোগ করলে পুনরায় আলোচনায় আসেন। যুক্তরাজ্যের অভিজাত ডিপার্টমেন্ট স্টোর ‘হ্যারোডসের’ মালিক ছিলেন ধনকুবের মোহামেদ আল ফায়েদ। সম্প্রতি ‘আল ফায়েদ: হ্যারোডসের শিকারি’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রকাশ হয়েছে। যেখানে নারী কর্মীদের ওপর তার যৌন নিপীড়নের নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। তবে কর্তৃপক্ষ তার এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।
প্রামাণ্যচিত্রটি প্রকাশের পর হ্যারোডসের অনেক সাবেক কর্মী বিবিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। অন্তত ২০ জন নারী আল ফায়েদের হাতে যৌন নিপীড়ন বা ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
হ্যারোডসের সাবেক কর্মীরাও তার এ নিপীড়নের বিষয়টি জানতেন। এক নারী কর্মী জানান, আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম যে তুমি এক অভাগা নারী। আজকের শিকার তুমি। এমনকি এটি থামাতে না পারার জন্য নিজেদের কাপুরুষ মনে হতো।
নারীরা জানিয়েছেন, হ্যারোডসে তারা কাজের সময় ভয়ের মধ্যে থাকতেন। ফলে তাদের আল ফায়েদের বিরুদ্ধে মুখ খোলা কঠিন ছিল। তাদের একজন জানান, সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থেকে কনিষ্ঠ পর্যন্ত সকলে ভয়ের মধ্যেই থাকতেন।
অনেকের বিশ্বাস, কর্মীদের ফোনকলে আড়ি পাতত হ্যারোডস। ফলে নারীরা তাদের অপকর্ম নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতেন। কেননা পোপন ক্যামেরায় তাদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে তারা মনে করতেন।