‘সন্ত্রাসী হামলা’ চালানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জামশিদ শারমাহদ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। তিনি ইরান ও জার্মানির দ্বৈত নাগরিক।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জামশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ইরানে রাজতন্ত্রপন্থি একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ২০০৮ সালে একটি প্রাণঘাতী বোমা হামলার পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল, তিনি দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা করছেন। ২০২৩ সালে ‘দুনিয়ায় দুর্নীতির’ অভিযোগে ইরানে ইসলামি আইনের আওতায় মৃত্যুদণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়।
এদিকে জামশিদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি ছিল, যা তার আইনগত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে একটি কলঙ্কিত ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, জামশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার করতে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকও এই মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং ইরানের ‘অমানবিক শাসনের’ সমালোচনা করে। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার তেহরানকে স্পষ্ট করে দিয়েছি, একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিণতি হবে গুরুতর।’
এর আগে ২০২০ সালে ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয় জামশিদকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। তাকে ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং বলা হয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসে ইরানে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পরিচালনার নির্দেশনা দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, লস অ্যাঞ্জেলসভিত্তিক ‘কিংডম অ্যাসেম্বলি অব ইরান’ নামের গোষ্ঠীটি ইরানে রাজতন্ত্র পুনর্বহাল চায় এবং বিদেশে রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন পরিচালনা করে।
জার্মানির বিরোধী দলের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস বলেন, ‘জার্মানির একজন নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর একটি জঘন্য অপরাধ।’ তিনি জার্মান সরকারকে এই ঘটনায় সুস্পষ্ট ব্যবস্থা নিতে আহ্বান করেছেন।
এই ঘটনাটি ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর নতুন করে আলো ফেলছে, বিশেষ করে জার্মানির মতো দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে।