সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে সিএন্ডএফ এজেন্ট দখল, লুটপাট ও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়াসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে শহরের নিউমার্কেট মোড়ের আলবারাকা হোটেলের তৃতীয় তলায় ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেন সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের রাহাতুল্লাহ গাইনের পুত্র সাবেক যুবদল নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী মো. আসাদুর রহমান।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি ভোমরাস্থল বন্দরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরেই ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবে ভোটও প্রদান করে আসছি। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দখলে রেখেছিল। কিন্তু আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আমাকে কোনো পদে আসতে না দিয়ে বঞ্চিত করেছে। তারা ইচ্ছামতো ব্যবসায়ীদের নানা ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম মিলন, লুৎফর রহমান মন্টুসহ কয়েকজন সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয় অবৈধভাবে দখল করে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাৎসহ লুটপাট চালাতে থাকে। ইচ্ছামতো সাধারণ সভার তারিখ নির্ধারন, ভোটার তালিকা থেকে অবৈধভাবে অনেক ভোটারদের নাম বাতিলসহ অনিয়ম করতে থাকে। অথচ হাবিবুর রহমান হাবিব নিজেই দীর্ঘদিন সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছিলেন না। সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন দখল করেই ইচ্ছামতো তার নাম সংযুক্ত করেছে। দখলের পর আমাকে তাদের কমিটিতে রাখার জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করে এবং চিঠিও ইস্যু করে। ওই চিঠিতে আমার নাম ছিল। কিন্তু দাবি মোতাবেক ১ লাখ টাকা দিতে না পারায় পরবর্তী এক চিঠিতে আমার নামের পরিবর্তে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এএসএম মাকছুদ খানের নাম সংযুক্ত করেন। অথচ এই মাকছুদ খান সিএন্ডএফের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হাবিবের দাবি মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় ওই কমিটির তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দিয়েই শুধু ক্ষ্যান্ত হননি। আমাকে ভোটার তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক। এ ছাড়া আমাকে হয়রানি করার জন্য হত্যা মামলার আসামিদের ভাড়া করে নাজমুল আলম মিলন ও লুৎফর রহমান মন্টুর নেতৃত্বে আমার বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধনের নাটকও সাজানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া হাবিবুর রহমান হাবিবের ইন্ধনে লুৎফর রহমান মন্টুর নেতৃত্বে ভোমরা ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন দখল করে লুটপাট চালানো হচ্ছে। মিলন ও মন্টু মাদক এবং চোরাচালানের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলাও রয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে জমি দখলের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি মিলন এবং তার বাহিনীর সদস্যরাও আসামি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে এ সময় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দখল ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত হাবিবসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।