বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ভূমিহীনদের দেওয়া সরকারি বাড়ি। কয়েক দিনে যমুনা নদীর ভাঙনে দুটি বাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আরও ২৪টি পাকা বাড়ি। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ৪৩টি পাকা বাড়িসহ একটি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চতুর্থ পর্যায়ে উপজেলার বিরামের পাঁচগাছি গ্রামে সরকারিভাবে ৬৯টি পাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে খরচ হয়েছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে যমুনা নদীর ভাঙনে ৬৯টি পাকা বাড়ির মধ্যে ২৬টি বাড়ি যমুনা নদীভাঙনের শিকার হয়েছে।
৪৩টি পাকা বাড়ি এবং শতাধিক ‘হেল্প মি’ সংস্থার টিনশেড বাড়িঘর যমুনা নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। ঘরগুলোকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বেশকিছু জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল; কিন্তু যমুনা নদীর প্রবল স্রোতে জিও এবং টিও ব্যাগ কোনো কাজে আসেনি।
একই গ্রামের মৃত হোসেন সরকারের স্ত্রী মিনি বেগম জানান, প্রায় ৯ বার যমুনা নদীভাঙনের শিকার হয়ে তিনি এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন আট বছর আগে।
দুই বছর আগে তিনি একটি পাকা বাড়ি পেয়েছিলেন। পাকা বাড়ি পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলেন। এ জীবনে তার পাকা বাড়িতে থাকার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে; কিন্তু কয়েক দিন ধরেই এ গ্রামে যমুনা নদীভাঙন শুরু হয়। মিনি বেগমের মতো ২৪টি পরিবারের লোকজন তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে চলে গেছেন। দুটি বাড়ি একেবারেই যমুনায় বিলীন হয়েছে। ভাঙনের শিকার কেউ কেউ অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা কালবেলাকে বলেন, ঘরগুলো নির্মাণের সময় স্থান নির্বাচন একেবারেই ভুল ছিল। নদীর দেড় কিলোমিটারের মধ্যে একেবারেই বালু মাটিতে ঘরগুলো করা উচিত হয়নি। ঘরগুলোর কবুলিওতের সময়ও আমার কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রত্যয়ন গ্রহণ করা হয়নি। তবে ভাঙনের শিকার মানুষগুলোর একটা ঠিকানা হোক সেটা আমি চাই।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, বিরামের পাঁচগাছি গ্রামের সরকারি ঘরগুলো রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও-টিও ব্যাগ ফেলে অনেকভাবে চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু যমুনা নদীর প্রবল স্রোতে তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
নদীভাঙনের শিকার উপকারভোগীদের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে চর ডিজাইনের ঘর প্রদান করে তাদের ফের পুনর্বাসন করতে সরকারের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।