চট্টগ্রামের পূজা মণ্ডপে ইসলামিক সংগীত পরিবেশনের অভিযোগে চট্টগ্রাম কালচারাল এ্যাকাডেমির কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামিক সংগীত পরিবেশনের সুযোগ দেওয়ায় সজল দত্তকে পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭টায় নগরের আন্দরকিল্লার জেমসেন হলে দেশাত্ববোধ সংগীত পরিবেশনের কথা বলে ইসলামিক সংগীত পরিবেশন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালেচনা সৃষ্টি হয়।
এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম নগর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ, সেনাবাহিনীসহ অনেকে। বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মতবিনিময় করেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়।
এরপর রাত সাড়ে ১১টায় ফের বৈঠকে বসেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। সেখান থেকে সজল দত্তকে বহিষ্কার করা হয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযান পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক হিল্লুর সেন উজ্জল কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম কালচারাল অ্যাকাডেমির ব্যানারে তারা এই গান পরিবেশন করেন। দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশনের কথা বলে তারা ইসলামিক সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর সনাতন ধর্মালম্বীদের মনে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তাৎক্ষণিক সজল দত্তকে পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ফেসবুকে ভিডিওটি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তাৎক্ষণিক সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনি। সবাইকে আইনগত সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার দাশ কালবেলাকে বলেন, শতশত পূজার্থীদের সামনে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন করায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে একটি সংগঠনের ব্যানারে সংগীতটি পরিবেশন করলেও তাদের চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা আরও খোঁজ নিচ্ছি।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের জানান, ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এদিকে রাত পৌনে ১২টা ফের উত্তপ্ত হয়ে পড়ে জেমসন হল। বাকবিণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ায় কিছু যুবক। সেখান থেকে এক আনসার সদস্যকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা।
তিনি জানান, ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে অসংলগ্ন কথা বলায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান পূজার্থীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থলে ব্যাপক পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে দেখা গেছে।