বিশ্ব

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মিসরের নতুন প্রস্তাব

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মিসরের নতুন প্রস্তাব


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রতিনিয়ত ডজন ডজন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। এরপরও বিভিন্ন এলাকায় গণগ্রেপ্তার ও তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এবার এ যুদ্ধ বন্ধে নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে মধ্যপ্রাচের দেশ মিসর।

রোববার (২৭ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রদিবেদনে বলা হয়েছে, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি গাজায় দুই দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছেন। এ সময়ে ইসরায়েলের চার জিম্মিকে হস্তান্তর করা হবে। বিনিময়ে বেশকিছু ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাদজিদ তিবুনির সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, অস্থায়ী এ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের ১০ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টায় পুনরায় আলোচনা শুরু করা উচিত।

সিসি এমন সময় এ প্রস্তাব করেছেন যখন কাতারে আলোচনার জন্য ইসরায়েল ও মিসরীয় প্রতিনিধিরা পুনরায় বৈঠক করতে চলেছেন।

এদিকে আলজাজিরা জানিয়েছে, রোববার গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে উত্তর গাজায় অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এলাকাটিতে ইসরায়েলি সেনারা অভিযান জোরদার ও গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে আরও দুজন সংবাদিক রয়েছেন। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ যুদ্ধে মোট ১৮২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ হাজার ৯২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার ৭৬৫ জন শিশু রয়েছেন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় এক লাখ ৮৩৩ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অধিকৃত পশ্চিত তীরে আরও ছয় হাজার ২৫০ জন আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে

গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে… দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’





Source link

Shares:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।