অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমি এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা কোনো দল, মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন না। আপনারা হলেন আন্দোলনের ফসল। আপনাদের দায়িত্ব হলো একটি নিরপেক্ষ সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আপনারা সংস্কারের কথা বলেন, আমরা রাজি আছি।
সংস্কার করতে গিয়ে যদি বছরের পর বছর চাকুরী এদেশের জনগণ গ্রহণ করবে না। আপনাদের শক্তি জনগণের আস্থা আর আল্লাহ সাহায্য। আপনাদের প্রতি মানুষের হতাশা বাড়ছে। মানুষ যা আশা করেছিলো তা আপনারা করতে পারছেন না। আপনাদের খুব ধীর- স্থির, সিদ্ধাহীনতা এই জাতিকে আবার কঠিন দূর্ভোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমরা দাবি করবো অনতিবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমানোর দিকে নজর দিন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৯টায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এ.আর হাইস্কুল মাঠে উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতের উদ্যোগে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথী হিসাবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াত ইসলামী কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
নাঙ্গলকোট উপজেলা আমির মাওলানা জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, দক্ষিণ জেলা আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, নোয়াখালী জেলা আমির মুহাম্মদ খন্দকার ইসহাক, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজিলিশে শূরা সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি ডক্টর সৈয়দ এ.কেএম সওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, জামায়াত নেতা ড.দেলোয়ার হোসেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, উপদেষ্টাদেরকে কঠোর পরিশ্রম করার সিন্দান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য করুন। আরও দ্রত কাজ করুন। মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করুন। তা না হলে জনগণ আবার ভিন্ন চিন্তা করতে পারে।সেটা এই দেশের জন্য কল্যাণ হবে না। আমরা চাই এই সরকার নির্ধারিত ও প্রয়োজনীয় সময় পযর্ন্ত টিকে থাকুক। একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সবাই মিলে দেশকে একটি সৎ, যোগ্য দুর্নীতি মুক্ত ও মানুষের আমানত রক্ষাকারী একটি দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারি। আমরা এ নেতৃত্ব নাঙ্গলকোট থেকে শুরু করবো। আপনি যে দলই করুন অসৎ নেতৃত্বকে কখনও ভোট দিবেন না।
হাজার-হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমরা সকল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাস করি। ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার, সন্ত্রাসবাদ কখনও গণতন্ত্র হতে পারেনা। যারা এর সাথে জড়িত তাদের নির্বাচন করার অধিকার থাকতে পারেনা। তারা যদি আবার ক্ষমতায় আসে স্বৈরশাসন কায়েম করবে। যারা গণহত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। জামায়াত নেতাদের বিচারের নামে হত্যায় যারা জড়িত সেই বিচারক ও তাদের পিছনে থেকে যারা ইন্দন দিয়েছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হবে। আমরা নির্বাচনী সংষ্কারের বিষয়ে দাবি করেছি আনুপাতিক হারে নির্বাচনের, এ নিয়মে ভোট হলে সারা দেশে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। ফলে কোন আসনে নির্দিষ্ট প্রার্থী না থাকায় দেশে নির্বাচন নিয়ে কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম হবে না। যে দল যত ভাগ ভোট পাবে তারা তার মূল্যায়নে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে।
তিনি আরও বলেন,বিগত সময়ে হাসিনার অত্যাচারে জাতি আল্লাহকে দোষারোপ করা শুরু করে ছিল, মানুষ বলেতে শুরু করেছে স্বৈরাচার হাসিনা আর কত হত্যা, গুম, নির্যাতন ও জুলুম করলে আল্লাহ তার বিচার করবে। অতঃপর আমরা চেয়ে ছিলাম হাসিনার পদত্যাগ কিন্তু আল্লাহ তাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করেছেন। খুন করে, লুট করে, জুলম করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচার চিরস্থায়ী হয়নি। বুক পেতে দেয়া মানুষকে হত্যা করা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এ দেশের মানুষেরা মুক্তির জন্য বারবার আন্দোলন করেছে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক বেলাল হোসাইন, কর্মপরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন, নাঙ্গলকোট পৌরসভা আমির মাওলানা এসএম মহিউদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরী সভাপতি কাজী নজির আহম্মেদ, দক্ষিণ জেলা সভাপতি খাইরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।