জোগো বোনিতো বা নান্দনিক ফুটবল, এই নামের সাথে সবচেয়ে পরিচিত যে দলটি সেটি হলো পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে মনে হচ্ছিল সেলেসাওরা যেন তাদের ফুটবল নান্দনিকতা ভুলতে বসেছে। আর তা হবেই বা না কেন? ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে যে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হয়েছিল নেইমারবিহীন ব্রাজিলের।
নেইমার এখনো ফেরেননি, তবে নান্দনিক ফুটবল খেলা ব্রাজিল মনে হয় ফিরছে। আর তারই ঝলক দেখালো তারা পেরুর বিপক্ষে। যেখানে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে বড় জয়ই তুলে নিয়েছে দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) অ্যারেনা গারিঞ্চাতে পেরুকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। ম্যাচটিতে সেলেসাওদের হয়ে বার্সা তারকা রাফিনহা জোড়া গোল করেন।
ব্রাসিলিয়ার এরিনা মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে আয়োজন করা ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা বাছাইপর্বের ১০তম রাউন্ডের ম্যাচে ব্রাজিল ৪-০ গোলে পেরুকে হারিয়ে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে। এই জয়ে ব্রাজিল এখন তালিকার চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে, আর পেরু নেমে গেছে পয়েন্ট তালিকার তলানির এক ধাপ আগে।
ব্রাজিলিয়ান দল এই ম্যাচে চিলির বিপক্ষে তাদের আগের জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামে এবং ঘরের মাঠের সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগায়। দলটি পেরুকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রেখে তাদের খেলার ছন্দকে ফিরিয়ে আনে। পেরু যারা উরুগুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়ে এই ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী ছিল, ম্যাচের প্রথম থেকেই ব্রাজিলিয়ান দলের দাপটে খেলায় সুবিধা করতে পারেনি।
প্রথমার্ধের শুরুর দিকে ব্রাজিল বলের উপর দখল রাখলেও, তারা সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। কিন্তু ৩৫ মিনিটের সময় পেরুর ডিফেন্ডার কার্লোস জামব্রানোর হাতে বল লাগায় পেনাল্টির সুযোগ পায় ব্রাজিল। রাফিনহা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করেন, ব্রাজিল ১-০ গোলে এগিয়ে যায়।
প্রথমার্ধের বাকি সময়েও ব্রাজিল আক্রমণাত্মক খেললেও, তাদের গোলের সুযোগ তৈরি করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও একটি পেনাল্টি পায় ব্রাজিল, এবারও পেনাল্টির ফাঁদে পড়েন কার্লোস জামব্রানো। রাফিনহা দ্বিতীয়বারের মতো পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করে দলের স্কোর ২-০ করে ফেলেন।
এরপর ব্রাজিল পুরোপুরি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ৭০ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা আন্দ্রেয়াস পেরেইরা দারুণ এক গোল করে দলের স্কোর ৩-০ করেন। আর ম্যাচের শেষদিকে লুইস হেনরিকের একটি অসাধারণ গোলের মাধ্যমে ব্রাজিল ৪-০ ব্যবধানে পেরুকে উড়িয়ে দেয়।
এই জয়ের মাধ্যমে ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ‘জোগো বোনিতো’ খেলার শৈলী আবার ফিরে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাসিং, ড্রিবলিং এবং নির্ভুল ফিনিশিংয়ের মাধ্যমে ব্রাজিলিয়ান দল ফুটবলের সৌন্দর্য তুলে ধরে। ম্যাচের শেষে ব্রাজিলিয়ান দল পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী ছিল এবং তারা এখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তাদের অবস্থান আরও মজবুত করেছে।
এই জয়ে ব্রাজিল এখন চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে, যা তাদের ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পেরুর বিপক্ষে এই জয় তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলেছে এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও তারা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবে।