বিশ্ব

উপকূলে আছড়ে পড়েছে হারিকেন মিল্টন, ভয়াবহ বিপর্যয়

উপকূলে আছড়ে পড়েছে হারিকেন মিল্টন, ভয়াবহ বিপর্যয়


উপকূলে আছড়ে পড়েছে হারিকেন মিল্টন। এর ফলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বলা হচ্ছে, ১০০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে এটি। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ আক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, রাডার ডেটা ইঙ্গিত করছে যে হারিকেন মিল্টন ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে সারাসোটা কাউন্টির সিয়েস্তা কী এলাকার কাছকাছি আছড়ে পড়েছে।

এনএইচসি জানিয়েছে, এটির বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৯৫ কিলোমিটার। ক্যাটাগরি-৩ আকারের হারিকেনে রূপ নিয়ে এটি আছড়ে পড়েছে। ফলে যারা এলাকাটিতে থেকে গেছেন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি।

পাওয়ারআউটেজ.ইউএস ট্রাকারের তথ্যমতে, এরইমধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ পরিসেবার বাইরে চলে গেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের কেন্দ্রীয় অঞ্চলজুড়ে বেশিরভাগ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এ এলাকাটিতে হারিকেন মিল্টন আছড়ে পড়েছে। তবে টাম্পা এবং আশপাশের এলাকায় বিভ্রাট সবচেয়ে গুরুতর আকার ধারণ করেছে।

এর আগে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, হারিকেন মিল্টনের কেন্দ্রটি আজ মেক্সিকোর পূর্ব উপসাগরজুড়ে তাণ্ডব চালাবে। গভীর রাতে বা বৃহস্পতিবার ভোরে ফ্লোরিডার পশ্চিম-মধ্য উপকূল বরাবর আঘাত হানতে পারে। এরপর পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে ফ্লোরিডার পূর্ব উপকূল থেকে ধীরে ধীরে সরে যাবে। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ার আশা করা হচ্ছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এর প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, প্রবল বাতাস এবং সম্ভাব্য ঝড়বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মিল্টন প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে আঘাত হানার সবচেয়ে খারাপ ঝড় হতে পারে। এর প্রভাবে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে দেড় ফুট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লোরিডার ৫১টি শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় স্কুল-কলেজ। অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর রন ডিসানটিসের তথ্য মতে, হারিকেনটি খুব কাছে অবস্থান করছে।

এর আগে বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হারিকেনের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধ্যতামূলকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ সেখান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে শুরু করেছেন। এর ফলে রাস্তায় গাড়ির জটের সৃষ্টি হয়েছে।

নির্দেশনা অমান্য করে এখনো যারা সেখানে অবস্থান করছেন তাদের সতর্কবার্তা দিয়ে টাম্পা বে-র মেয়র জেন ক্যাস্টর বলেন, বিপর্যকর প্রভাব ফেলবে হারিকেন মিল্টন। নির্দেশনা অনুসারে আপনারা সরে না গেলে মারা যাবেন। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হবে। সত্যি বলতে, আমি আমার জীবনে এমন হারিকেন আগে কখনো দেখিনি।

এর আগে সম্প্রতি ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড শহরের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় হেলেন। এ সময় ওই এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। বিধ্বংসী গতির এই ঝড়ের কারণে বিগ বেন্ড এবং এর আশপাশের এলাকার অজস্র গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রাস্তাঘাট ডুবে যায়।

ব্যাপক ধ্বংসাত্মক হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর হেলেনকে ‘ক্যাটাগরি ৪’ ঘূর্ণিঝড়ের তকমা দেয়। বিগ বেন্ডে আছড়ে পড়ার পর জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলাইনা ও দক্ষিণ ক্যারোলাইনার দিকে এগোতে থাকে হেলেন। এ সময় কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগও।

মার্কিন আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বিধ্বংসী ক্ষমতার দিক দিয়ে ১৪তম এবং প্রশস্ততার দিক দিয়ে ‍তৃতীয়। ফ্লোরিডায় আঘাত হানার সময় এর পরিধি ছিল ৬৭৫ কিলোমিটার।





Source link

Shares:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।