রাজনীতি

শেখ হাসিনা তার বাবার সঙ্গে বেইমানি করেছেন : রাশেদ খাঁন

শেখ হাসিনা তার বাবার সঙ্গে বেইমানি করেছেন : রাশেদ খাঁন


গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার সঙ্গে বেইমানি করেছেন। জনগণের টাকা অপচয় করে শেখ মুজিবুরকে দেবতা বানানোর চেষ্টা করেছেন শেখ হাসিনা। যার ফলাফল জনগণের সামনেই- শেখ মুজিবুরের ভাস্কর্য ভেঙে ঝুলে আছে।’

একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে এতটাই ঘৃণা তৈরি হয়েছিল যে, শেখ হাসিনা পালানোর পর তার পরিবারের কোনো অস্তিত্ব জনগণ রাখেনি। এছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে সব গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা।’

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তাড়াইল উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জহিরুল হক।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসার সময় যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে উন্নয়নের নামে কিশোরগঞ্জবাসীর সাথে বেইমানি করা হয়েছে। পুরো রাস্তা ভাঙাচোরা, কর্দমাক্ত। যে জেলা থেকে দেশের তিন তিনজন রাষ্ট্রপতি হয়েছে, সে জেলার এই হাল কেন? আপনাদের এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিল জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। সে তো জাতীয় বেইমান। জাতীয় পার্টিকে শেখ হাসিনার দোসর বানিয়েছে। জিএম কাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে আ.লীগের অধীনে নির্বাচনে নিয়ে গিয়েছে। এই বেইমানকে আপনাদের উচিত তাড়াইলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা।’

আমরা ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি উল্লেখ করে রাশেদ খাঁন বলেন, দল গঠন করে রাষ্ট্র সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছি। আমরা তো সেই ২০২১ সালেই বলেছি, রাজনৈতিক দলীয় প্রধান রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না, ২ বারের বেশি কেউ রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। এই রাষ্ট্র সংস্কারের বাণী পৌঁছে দিতেই আমরা এখানে এসেছি।

আমরা শেখ হাসিনাকে দেখেছি দলীয় প্রধান থেকে রাষ্ট্রীয় প্রধান হয়ে গণভবনকে আ.লীগের কার্যালয় বানিয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরপর ৪ বার ক্ষমতায় থেকে আ.লীগকে কর্তৃত্ববাদী দল বানিয়ে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে কাউকে কাউকে মাস্টারমাইন্ড বলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলন নিয়ে একক কাউকে মাস্টারমাইন্ড বলা মানে অন্যদের অবদান অস্বীকার করা। এই আন্দোলন ছিল সর্বজনীন আন্দোলন। সব দল-মত-পথের মানুষ ছিল। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই ২য় মুক্তি আমরা পেয়েছি। এটাতে আ.লীগের মতো কেউ একক অর্জন মনে করলে, তাদের অবস্থাও আ.লীগের মতো হবে। এখন সময় এসেছে দেশকে গড়ার। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে স্বাধীনতাকে কেউ নস্যাৎ করবেন না। আগামীতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির সংস্কার গঠন করে এ দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কিশোরগঞ্জে যারা গুলি চালিয়েছে তাদের অনেকেই এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের দ্রুত আটক করতে হবে। সম্প্রতি আমরা শুনেছি শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে, শেখ হাসিনার ঠিকানা কোনো দেশে নয়, শেখ হাসিনার ঠিকানা হবে তার সৃষ্টি করা আয়না ঘরে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে আগে, তারপর তাদের রাজনীতির চিন্তা।

দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঐতিহাসিক সমাপ্তি ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান। দীর্ঘ ১৬ বছর শেখ হাসিনার গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ এই অভ্যুত্থান। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সাথে গণঅধিকার পরিষদ, বিএনপি, জামায়াত, ডান-বাম সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।

গণঅধিকার পরিষদের তাড়াইল উপজেলার সদস্য সচিব জাকিরুল ইসলাম বাকির সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- বৈদেশিক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সহ-দপ্তর সম্পাদক মোখলেসুর রহমান উজ্জ্বল প্রমুখ।





Source link

Shares:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।