জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, বিগত ১৭ বছরে শেখ হাসিনা যে অপকর্ম করেছে সেগুলোর এখনো মামালা হয়নি, এই বৈষম্য করা যাবে না। তার সব অপকর্মের বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি ছিল বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, সে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। দাবি ছিল বাংলাদেশের মানুষ পথে-প্রান্তরে মন খুলে কথা বলতে পারবে কিন্তু সে কথা বলার অধিকার আদায়ের আন্দোলনেও অনেককে জীবন দিতে হয়েছে।
শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) বিকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জমিদার হাট এলাকায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে জেলাভিত্তিক সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসএম জিলানী বলেন, “অধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ১৭টি বছর আপনাদের নিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করেছি, কিন্তু আপনারা দেখেছেন সে লড়াই-সংগ্রাম করতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপরে কি পরিমাণে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে। একের পর এক মামলা দেওয়া হয়েছে, দিনের পর দিন কারাগারে রুদ্ধ করা হয়েছে। আমরা দেখেছি চৌধুরী আলম ও ইলিয়াস আলীসহ প্রায় ৬শর উপরে নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। শেখ হাসিনার আয়না ঘরে গুম করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে।
আমরা দেখেছি, যখনই কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি এসেছে, বাংলাদেশের গণমানুষের ন্যায়সংগত আন্দোলন সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে করেছি, তখনই কেউ ঘরে ঘুমাতে পারেনি। কেউ নদীর চরে, কেউ গোয়াল ঘরে, কেউ হাসপাতালের বারান্দায় রাত কাটিয়েছে। সেখান থেকে এসে আবার রাজপথে আন্দোলন করেছে এই স্বেরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে। তারপরও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের শত নির্যাতনের পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা হিমালয়ের অসীম সাহস নিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন ও প্রতিবাদ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “দেড় মাস হয়ে গেছে পতিত আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হচ্ছে। গত দুই দিন আগে দেখছি নোয়াখালীর এক গডফাদারকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। ওনার অবস্থা দেখে মনে হলো ওনি কতো দিন খান নাই, ওনাকে দেখে মায়া লেগেছে। কিন্তু আমরা এই নোয়াখালীর মাটিতে দেখেছি বিএনপি নেতাকর্মী যখন কারাগারে গিয়েছে ওনি নিজে গিয়ে জেলারকে বলছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ডাণ্ডাবেড়ি পরাতে হবে। কিন্তু এখনো আমরা এ কাজটা করিনি।”
তিনি বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় শেখ হাসিনার নামে মামলা হচ্ছে, পালিয়ে যাওয়ার আগে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে তিনি হুকুম দিয়ে হত্যা করার অভিযোগে। প্রায় ১৪শ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছেন, ২১ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করেছেন। তারা এখন বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এগুলো ব্যাপারে শেখ হাসিনার মামলা হয়েছে। কিন্তু দেড় যুগ জনসাধারণের উপর যে অত্যাচার চালিয়েছে তার বিচারও এ মাটিতে করতে হবে।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছাবের আহামদ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম তারেক, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।